ইতিহাস

ইরানে পাওয়া 3,000 বছরের পুরনো লাল লিপস্টিক সম্ভবত বিশ্বের প্রাচীনতম

বিজ্ঞাপন

এটা দারুন! ইরানে ৩,০০০ বছরের পুরনো লাল লিপস্টিক খুঁজে পাওয়া একটি অবিশ্বাস্য আবিষ্কার। হাজার হাজার বছর আগে মানুষের সৌন্দর্য পণ্য তৈরির জ্ঞান এবং কৌশল কীভাবে ইতিমধ্যেই ছিল তা ভেবে অবাক লাগে। এই আবিষ্কার অতীতের দিকে একটি জানালা প্রদান করে এবং প্রাচীন সভ্যতার সাংস্কৃতিক ও নান্দনিক অনুশীলনগুলিকে আরও ভালভাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করে।

প্রাচীন লিপস্টিকের আবিষ্কার কীভাবে হয়েছিল

ইরাকি কুর্দিস্তানের জিয়ারেত টেপে স্থানে পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে প্রাচীন লিপস্টিকের আবিষ্কার ঘটে। খননকালে, প্রত্নতাত্ত্বিকরা একটি ছোট চুনাপাথরের পাত্র খুঁজে পান যেখানে একটি লাল পদার্থ ছিল, যা পরে লিপস্টিক রঙ্গক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

এই আবিষ্কারটি তাৎপর্যপূর্ণ ছিল কারণ বোতলটি প্রায় ৩,৫০০ বছর আগের, যা সম্ভবত এটিকে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে প্রাচীন লিপস্টিক হিসেবে চিহ্নিত করে। রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে পদার্থটিতে হেমাটাইট, একটি লাল রঙ্গক এবং উদ্ভিদ মোমের চিহ্ন রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে এটি একটি প্রসাধনী হিসাবে ব্যবহৃত হত। এই আবিষ্কারটি এই অঞ্চলের প্রাচীন সভ্যতার সৌন্দর্য অনুশীলন এবং বস্তুগত সংস্কৃতির উপর আলোকপাত করে।

ব্রোঞ্জ যুগের লাল লিপস্টিক

হ্যাঁ, ঠিক! ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে এই লাল লিপস্টিকের আবিষ্কার ব্রোঞ্জ যুগে, যা প্রায় ৩৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এটা সত্যিই অসাধারণ যে হাজার হাজার বছর আগেও মানুষ লিপস্টিকের মতো সৌন্দর্য পণ্য তৈরি করছিল।

এই ধরণের প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার আমাদের কেবল সেই সময়ের সৌন্দর্য অনুশীলনগুলিই নয়, বরং সমাজ, সংস্কৃতি এমনকি বাণিজ্যের দিকগুলিও আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে, কারণ এই লিপস্টিকের উপস্থিতি সেই প্রাচীন সমাজে এই পণ্যগুলির উৎপাদন এবং ব্যাপক ব্যবহারের কিছু রূপ নির্দেশ করে।

বিভিন্ন সভ্যতায় মেকআপের ব্যবহার

মেকআপ মানব ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অনেক সভ্যতা এটি ব্যবহার করে আসছে। বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মেকআপ কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে তার কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হল:

১. **প্রাচীন মিশর**: মিশরীয়রা তাদের প্রসাধনী ব্যবহারের জন্য পরিচিত ছিল। তারা তাদের চোখ উজ্জ্বল করার জন্য কোহল (একটি কালো সীসা-ভিত্তিক রঙ্গক) এর মতো পণ্য ব্যবহার করত, পাশাপাশি তাদের ঠোঁট এবং ত্বকের জন্য রঞ্জক এবং সুগন্ধি তেলও ব্যবহার করত।

২. **প্রাচীন গ্রীস এবং রোম**: গ্রীক এবং রোমান উভয়ই মেকআপ পরত, বিশেষ করে সমাজের উচ্চবিত্তরা। তারা ফর্সা ত্বককেও মূল্য দিত এবং এই প্রভাব অর্জনের জন্য সাদা চক জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করত।

৩. **মধ্যপ্রাচ্যের সভ্যতা**: পারস্য এবং অ্যাসিরিয়ানদের মতো সভ্যতারও নিজস্ব মেকআপ ঐতিহ্য ছিল। এর মধ্যে ছিল চোখের জন্য কোহল ব্যবহার করা এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক রঙ্গক প্রয়োগ করা।

৪. **এশিয়ান সভ্যতা**: এশিয়ায়, বিভিন্ন সংস্কৃতি তাদের নিজস্ব মেকআপ ঐতিহ্য গড়ে তুলেছিল। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন চীনে, লাল রঙের ঠোঁটকে মর্যাদা এবং সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হত। জাপানে, ঐতিহ্যবাহী কাবুকি থিয়েটার মেকআপ একটি অত্যন্ত স্টাইলিশ শিল্প রূপ।

৫. **আমেরিকার সভ্যতা**: কলম্বিয়ার পূর্বে আমেরিকায়, অনেক আদিবাসী সভ্যতা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং অনুষ্ঠানে তাদের মুখ এবং দেহ রঙ করার জন্য প্রাকৃতিক রঙ্গক ব্যবহার করত। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাজটেকরা তাদের দেহ রঙ করার জন্য আকিওট এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক রঞ্জক ব্যবহার করত।

এগুলো মাত্র কয়েকটি উদাহরণ, কিন্তু এগুলো দেখায় যে ইতিহাস জুড়ে বিভিন্ন সংস্কৃতিতে মেকআপ কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, প্রায়শই নান্দনিক, ধর্মীয়, সামাজিক বা প্রতীকী উদ্দেশ্যে।